জীব-ভূ-রাসায়নিক চক্রের সংজ্ঞা – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “পরিবেশ অধ্যয়ন” বিষয়ের “প্রাকৃতিক সম্পদ” বিভাগের একটি পাঠ।
পরিবেশের বিভিন্ন অংশে মৌলের বণ্টন নির্ভর করে পরিবেশের এক অংশ থেকে অন্য অংশে এদের চলাচলের উপর। যেমন – বিভিন্ন দ্রবীভূত ও ভাসমান পদার্থকে নদী ভূমি থেকে সাগরে বহন করে নিয়ে যায়। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে dioxygen যোগ করে এবং শ্বসন দ্বারা এটা অপসারিত হয়। এসব প্রক্রিয়া প্রাকৃতিক। কিন্তু মানবজাতির কাজকর্ম অনেক রাসায়নিক পদার্থের চলাচলে পরিবর্তন আনয়ন করেছে। যৌগের স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ঘটেছে, eg. CO2 । বায়ুমণ্ডল, হাইড্রোস্ফেয়ার এবং লিথোস্ফেয়ারের মধ্যে রাসায়নিক মৌলের স্থানান্তর ভূ-রাসায়নিক চক্র দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় ।
জীব-ভূ-রাসায়নিক চক্রের সংজ্ঞা
“যে চক্র দ্বারা ভূ-রাসায়নিকভাবে মৌলের বণ্টন পরিবেশের বিভিন্ন অংশে বণ্টন করা হয়, এদের ভূ-রাসায়নিক চক্র বলে।” প্রত্যেক ভূ-রাসায়নিক চক্র একটা মডেল, যা কোনো রাসায়নিক মৌল বা এর যৌগ পরিবেশের বিভিন্ন অংশে চলাচলকে ব্যাখ্যা করে । ভূ-রাসায়নিক চক্রের মডেল নিম্নে প্রদত্ত হলো :
ভূ-রাসায়নিক চক্রের উপর মানুষের কার্যকলাপের সর্বোচ্চ প্রভাব দ্বারা কঠিন পদার্থের ভূমি থেকে সমুদ্রে স্থানান্তরের হারকে বৃদ্ধি করেছে। তাই এখন ভূ-রাসায়নিক চক্রকে বৃহৎ পরিসরে জীব-ভূ-রাসায়নিক চক্র হিসেবে অভিহিত করা হয় জীব-ভূ-রাসায়নিক চক্র হলো পদার্থের চক্রসমূহ যেখানে জীব, রাসায়নিক এবং ভূতত্ত্ববিষয়ক প্রক্রিয়া এবং ঘটনা জড়িত।
জীব রাসায়নিক চক্রের উপর মানুষের প্রভাব ঃ
(ক) জীবাশ্ম জ্বালানির যথেষ্ট ব্যবহারের ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ও সালফার ইত্যাদি যৌগগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হচ্ছে এবং বায়ুদূষণ ঘটছে।
(খ) কৃত্রিম স্যার প্রয়োগের ফলে মাটিতে অতঃপর জলাশয়ে সালফার, ফসফরাস, নাইট্রোজেন ইত্যাদি যুক্ত হচ্ছে এবং এদের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হচ্ছে।
(গ) অক্সিজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, সালফার ইত্যাদি প্রতিটি মৌল চক্রাকার পথে আবর্তিত হওয়ার মাধ্যমে মৌল পদার্থের অজৈব ভাণ্ডার ও জীবদেহের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে।
(ঘ) স্বাভাবিক নিয়মে অতিরিক্ত মৌল আবর্তিত হতে অক্ষম, ফলে অ্যাসিড এবং এর প্রভাব মাটি ও পানির pH এর পরিবর্তন, গ্রিনহাউজ ইফেক্ট, ইউট্রোফিকেশন ইত্যাদি বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
ভূ-রাসায়নিক চক্র নিম্নলিখিত প্রকারের হয়ে থাকে; যথা—
(a) কার্বন চক্র (Carbon cycle)
(b) নাইট্রোজেন চক্র (Nitrogen cycle)
(c) ফসফরাস চক্র (Phosphorus cycle)
(d) সালফার চক্র (Sculpture cycle)
(e) পানিচক্র বা হাইড্রলজিক চক্র (Hydrologic cycle)
আরও দেখুনঃ
- খনিজ সম্পদ | প্রাকৃতিক সম্পদের ভূমিকা | পরিবেশ- অধ্যয়ন
- পানি সম্পদ | প্রাকৃতিক সম্পদের ভূমিকা | পরিবেশ- অধ্যয়ন
- বনজ সম্পদ | প্রাকৃতিক সম্পদের ভূমিকা | পরিবেশ- অধ্যয়ন
- প্রাকৃতিক সম্পদের শ্রেণিবিভাগ | প্রাকৃতিক সম্পদের ভূমিকা | পরিবেশ -অধ্যয়ন
- প্রাকৃতিক সম্পদের সংজ্ঞা | প্রাকৃতিক সম্পদের ভূমিকা | পরিবেশ- অধ্যয়ন