বাংলাদেশ পরিবেশ কাঠামো

বাংলাদেশ পরিবেশ কাঠামো – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “পরিবেশের আইনগত নিরাপত্তা” বিষয়ের “পরিবেশ অধ্যয়ন” বিভাগের পাঠ।  বাংলাদেশের পরিবেশ কাঠামো প্রধানত দুই প্রকার, যথা-

(ক) প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো

(খ) আইনগত কাঠামো। 

বাংলাদেশ পরিবেশ কাঠামো

 

(ক) প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো :

১। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্বিক দিক-নির্দেশনা প্রদান তথা যাবতীয় বিষয় নিয়ে সরকার প্রধানের সভাপতিত্বে একটি জাতীয় পরিবেশ কমিটি গঠন সম্ভব। 

২। পরিবেশ সংক্রান্ত যে-সমস্ত প্রযোজ্য আন্তর্জাতিক আইন বা কনভেনশন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদনযোগ্য, তা অনুমোদন করা এবং ঐ সমস্ত আইন, কনভেনশন বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের সংশোধন বা পরিবর্তন করা ।

(খ) আইনগত কাঠামো :

১। পরিবেশ ও তার সম্পদ যথাযথ সংরক্ষণ এবং পরিবেশ দূষণ ও তার অবক্ষয় নিয়ন্ত্রণের সাথে সম্পর্কিত সকল বর্তমান আইন সময়মতো প্রয়োজনবোধে কার্যোপযোগী করে সংশোধন করা। 

২। সমস্ত প্রাসঙ্গিক আইনগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করা এবং এই সম্পর্কে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। 

 

বাংলাদেশ পরিবেশ কাঠামো  | পরিবেশের আইনগত নিরাপত্তা | পরিবেশ অধ্যয়ন

 

মনট্রিল ও কিয়োটো প্রোটোকল (The Montreal and Kyoto Protocol) :

(ক) মনট্রিল প্রোটোকল (The Montreal Protocol)  :

মনট্রিল প্রোটোকল একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা ওজোন স্তর ধ্বংসকারী কণার উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য করা হয়েছিল। এটি ওজোন স্তর রক্ষা সংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশনের একটি প্রোটোকল । ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় এবং ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। ১৯৮৯ সালের মে মাসে হেলসিনকিতে এ সংক্রান্তে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সময়ে এই প্রোটোকলের ৮টি সংস্করণ করা হয়। ১৯৯০ সালে লন্ডন, ১৯৯১ সালে নাইরোবি, ১৯৯২ সালে কোপেন হেগেন, ১৯৯৩ সালে ব্যাংকক, ১৯৯৫ সালে ভিয়েনা, ১৯৯৭ সালে মনট্রিল, ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯৯ সালে বেইজিং এবং ১৯৯৬ সালে কিগালীতে এই সংস্কারগুলো করা হয়।

আন্তর্জাতিক এই চুক্তির ফলে, এন্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন স্তর আবার পুনরুদ্ধার হচ্ছে। জলবায়ু প্রজেকশনের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, ওজোন স্তর ২০৫০-২০৭০ সালের মধ্যে আবার ১৯৮০ সালের পর্যায়ে ফিরে আসবে। ওজোন সংক্রান্ত দুটি চুক্তিতে ১৯৭টি দেশ স্বাক্ষর করেছে, মনট্রিল চুক্তি সংক্রান্ত কিছু তথ্য নিচে দেওয়া হলো  :

 

বাংলাদেশ পরিবেশ কাঠামো  | পরিবেশের আইনগত নিরাপত্তা | পরিবেশ অধ্যয়ন

 

(খ) কিয়োটো প্রোটোকল (The Kyoto Protocol) :

কিয়োটো প্রোটোকল একটি বহুরাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলোকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের জন্য দায়বদ্ধ করে। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ডিসেম্বর জাপানের কিয়োটো শহরে এই চুক্তি প্রথম গৃহীত হয় এবং ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর প্রথম কার্যকরী হয়।

বর্তমানে এই চুক্তি দ্বারা ১৯২টি দেশ দায়বদ্ধ রহিয়াছে। এই চুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলতে পারার মতো বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ কমিয়ে আনার ‘দি ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেইঞ্জ’ সভায় গৃহীত লক্ষ্যমাত্রাগুলোকে পূরণ করার কথা বলা হইয়াছে। ঐতিহাসিকভাবে উন্নত দেশগুলো বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বর্তমান পরিমাণের জন্য দায়ী বলেও চিহ্নিত করে এই চুক্তি এই দেশগুলোকে নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনার জন্য দায়বদ্ধ করে। এর ফলে ২০০৮ থেকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে প্রথম দায়বদ্ধতা সময়কালে ৩৭টি শিল্পোন্নত দেশের নিঃসরণের পরিমাণ বেঁধে দেওয়া হয়।

 

google news
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

২০১২ খ্রিষ্টাব্দে এই চুক্তিকে পরিবর্ধিত করে পেশ করা হয, যা দোহা সংশোধনী নামে পরিচিত। এই সংশোধনী অনুসারে শুধুমাত্র ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। দূষণ সৃষ্টিকারীর রাষ্ট্রগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করার জন্য কিয়োটো পরবর্তী একটি আইনি কাঠামো তৈরির চেষ্টা চলছে, যা ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে প্যারিস শহরে পেশ করা হবে। চীন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের কোনো আইনি দায়বদ্ধতার জন্য স্বাক্ষর না করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিয়োটো প্রটোকল সংক্রান্ত কিছু তথ্য নিচে দেয়া হলো :

 

বাংলাদেশ পরিবেশ কাঠামো  | পরিবেশের আইনগত নিরাপত্তা | পরিবেশ অধ্যয়ন

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment